মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চল ফের উতপ্ত হয়ে ওঠেছে। এবার টেকনাফের নাফ নদের ওপার থেকে থেমে থেমে ভারী গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। এ সময় মিয়ানমারের আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা গেছে।
নাফ নদ তীরবর্তী অঞ্চল ও সেন্টমার্টিনে শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টা থেকে ওপার থেকে গোলাগুলির শব্দ আসতে থাকে। দুপুর ১২টার দিকেও থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।
আগের দিন বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত টেকনাফের দক্ষিণ দিকের মিয়ানমার সীমান্ত থেকে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। তখন কয়েকটি স্থান থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে।
নাফ নদের কাছাকাছি এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর ঘিরে স্থানীয় বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘাত তীব্র হয়েছে। সেখানে মেগিচং, কাদিরবিল, নুরুল্লাহপাড়া, মাংগালা ও ফাদংচা গ্রামেই এসব গোলাগুলি হচ্ছে। এসব এলাকায় মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) কয়েকটি ফাঁড়ি রয়েছে। এসব ফাঁড়ি ঘিরে সংঘাত চলছে।
টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ২ নম্বর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহি উদ্দিন আহমেদ বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রাতভর গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন সীমান্তে থাকা বিজিবির সদস্যরা। সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর হোছাইন জানান, নাফ নদের পূর্ব ও দক্ষিণাংশের ওপারে মিয়ানমার সীমান্তে বৃহস্পতিবার রাতভর থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। শুক্রবার সকালে দুটি বিকট শব্দে এপারের মাটি কেঁপে ওঠে। এখনও (দুপুর ১২ টা পর্যন্ত) থেমে থেমে শব্দ শুনা যাচ্ছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১টা থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। মাঝেমধ্যে মাটি কাঁপানো শব্দও শুনেছেন। সকালের ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলির শব্দে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে।
শাহপরীর দ্বীপের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আমিন জানান, শাহপরীর দ্বীপের ওপারে মিয়ানমারের মংডুতে শুক্রবার সকালে হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। এর কিছুক্ষণ পর বিকট দুটি শব্দে কেঁপে উঠেছে সীমান্ত এলাকা।
একই দ্বীপের বাজারপাড়ার বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, মিয়ানমারে রাতভর থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। তবে সকালে দুটি বিকট শব্দে এপারের মাটি কেঁপে উঠেছে। এখনও থেমে থেমে আসছে শব্দ।