আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার পথে নৌকা ডুবে ১৫ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও ১৭৭ জন অভিবাসীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
কোস্টগার্ডের দু’টি নৌকায় করে লিবিয়ায় ফেরার পথে জীবিতদের পাশাপাশি মৃত অভিবাসীদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।
অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে সংস্থাটি কিছু জানায়নি।
সম্প্রতি লিবিয়া, তিউনিসিয়া ও অন্যান্য এলাকা থেকে ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন স্থান অভিমুখে অভিবাসীদের ভিড় বেড়েছে। অবৈধপথে ইউরোপে পৌঁছাতে ছোট ছোট নৌকায় করে অভিবাসীরা বিপজ্জনকভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে থাকে।
এদিকে বিপজ্জনক সমুদ্রপথ পেরিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টার সময় সাগরে ডুবে অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থীদের মৃত্যুর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।
গত জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে নতুন এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি এই তথ্য জানায়। আইওএম বলেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত কমপক্ষে এক হাজার ১৪৬ জন মারা গেছেন। ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টাকারী মানুষের সংখ্যা ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
রয়টার্স বলছে, সেপ্টেম্বর মাসে ২৩ হাজারেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থীকে অবৈধপথে সমুদ্র পাড়ি দেওয়া ঠেকিয়ে দিয়েছে লিবিয়ার কোস্টগার্ড। তবে লিবিয়ায় অবস্থান করেও নিরাপদে নেই অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থীরা।
বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপে পাড়ি জমাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লিবিয়ায় পৌঁছানো অভিবাসীরা উত্তর আফ্রিকার এই দেশটিতে নির্যাতন, কারাবরণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন। গত সপ্তাহজুড়ে চালানো অভিবাসীবিরোধী অভিযানে ৫ হাজারের বেশি শরণার্থী ও অভিবাসীকে আটক করেছে লিবিয়া।
এ ছাড়া, গত শুক্রবার একটি কারাগারের ভেতরে কমপক্ষে ছয় জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে গুলি করে হত্যা করে দেশটির নিরাপত্তারক্ষীরা। কারাগারে উপচে পড়া ভিড়ের ফলে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার কারণে তাদেরকে হত্যা করা হয়। সেসময় অনেক অভিবাসনপ্রত্যাশী পালিয়ে যেতে সক্ষম হন বলেও জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা।