বিএনপির বিরুদ্ধে বারবার ষড়যন্ত্র হয়েছে: ফখরুল

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০২৩

ঢাকা : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বারবার বিএনপির ওপর আঘাত এসেছে। বহু ষড়যন্ত্র চলছে। দলকে ভেঙে ফেলা ও ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু বিএনপির অগ্রযাত্রা থামানো যায়নি। কারণ বিএনপি হলো স্রোতস্বিনী ও প্রবাহমান নদী। এখানে কেউ এসেছে, কেউ চলে গেছে।

সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে দলের অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে যৌথসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেন, আগামী নির্বাচনে বিরোধীদলের মাঠ শূন্য করতে আবারও চক্রান্ত চলছে। একই কায়দায় গত পরশুদিন রাতে আমাদের দলীয় কার্যালয়ে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করেছে। অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার করেছে। গত শনিবার হবিগঞ্জে সাবেক মেয়র জি কে গাউছ এর বাড়িতে গুলি করেছে। তিনশতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল রোববার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সেখানে দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও গুলি করেছে। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যে ভাষায় বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে বিরোধীদল শূন্য নির্বাচন করতে চায়।

তিনি বলেন, এখন শুরু হয়েছে মেগাপ্রকল্প চালু করা। কার জন্য? কিসের জন্য? এগুলোর লক্ষ্য হলো তাদের পকেট ভরানো। এগুলো তো জনগণের ট্যাক্সের টাকায়। সুতরাং এখানে তো বলার কিছু নেই যে আপনি উন্নয়ন করেছেন! আজকে জাতি এদের হাত থেকে মুক্তি চায়।

প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ২১ আগস্ট সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগের সাজানো নাটক। তারা যেখানে সভা করতে চেয়েছিল, সেখানে করেনি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাদের নাম জড়ানো হয়েছে। ২১ আগস্টের ঘটনায় তো পুরো তদন্তের কোথাও তারেক রহমানের নাম উল্লেখ ছিলো না। তদন্ত কর্মকর্তা আবুল কাহার আকন্দ, যিনি পরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন। তার তদন্তেও তারেক রহমানের নাম উল্লেখ ছিলো না। একমাত্র মুফতি হান্নানকে ৪৫ দিন আটকে রেখে জোর করে জবানবন্দি নেওয়া হয়। তবে তিনি যেনো আদালতে গিয়ে কোনো কিছু বলতে না পারেন সেজন্য অন্য মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। সুতরাং এখানে তারেক রহমান, আব্দুস সালাম পিন্টু ও লুৎফুজ্জামান বাবর কেউই জড়িত নন। বরং এই ঘটনার আরো সঠিক তদন্ত দাবি করেন তিনি।

আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা এখনো রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হইনি। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করি। তাদের নিয়েই আমরা আছি। আজকে দেশের মানুষ নির্বাচন চায়। সেই বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এ ধরনের কথাবার্তা হচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে আমেরিকার কেউ স্বীকার করেনি। ভারতেরও কেউ স্বীকার করেনি।

তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম। যিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা ও আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। তিনি এমন সময় দেশের হাল ধরেন যখন তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সকল দলকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিলো। এর প্রেক্ষিতে বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেসময় দেশ একটি দলের হাতে চলে গিয়েছিল। জিয়াউর রহমান স্বল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশকে একটি স্বনির্ভর বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

তিনি আরো বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর তার সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়ার যোগ্য নেতৃত্ব বিএনপি এগিয়ে চলেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫২ বছরে আমরা সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছি। এই সরকারের দেশে মানুষের আকাঙ্খা ধ্বংস করেছে। প্রশাসন বলুন আর যাই বলুন, সবকিছু ধ্বংস করেছে। আজকে একটি কোম্পানি ১১ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। কারণ তাদের নিজেদের লক্ষ্য সেটা।

তিনি বলেন, আমরা ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার লড়াই করে যাচ্ছি। এখানে সবারই ভুমিকা রাখার সুযোগ আছে। সকলকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্যান্যবারের মতো আগামী ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৬ টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সময়মতো আলোচনা সভা করা হবে। পোস্টার প্রকাশ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করা হবে। বিস্তারিত কর্মসূচি আজ (সোমবার) দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনায় চূড়ান্ত হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক মো. আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, আব্দুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, মো. মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী। অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, রাজীব আহসান, ছাত্রদলের রাজিবুল ইসলাম রাকিব, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শ্রমিক দলের মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, মৎস্যজীবী দলের মো. আবদুর রহিম এবং অধ্যক্ষ সেলিম মিয়া, ওলামা দলের শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ ও মজিবুর রহমান, জাসাসের হেলাল খান ও জাকির হোসেন রোকন প্রমুখ।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com